৫ টি শর্তে বাতিল করতে পারবেন আপনার TIN / eTin Certificate - Tax Identification Number

আমরা সবাই কমবেশী ইতোমধ্যে জেনে গেছি যে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট অনুযায়ী করযোগ্য আয় না থাকলেও ২০০০ টাকা ইনকাম ট্যাক্স অর্থাৎ আয়কর প্রদান করার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন বাজেটে উল্লেখিত এই প্রস্তাব অনুযায়ী, সরকারী বিভিন্ন খাতে প্রায় ৪৪ ধরণের সেবা গ্রহণ করার জন্য আয়কর রিটার্ণ সার্টিফিকেট থাকা বাধ্যতামূলক। এরই প্রেক্ষিতে TIN অর্থাৎ Tax Identification Number-ধারী প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর ২০০০ টাকা আয়কর প্রদান করার নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। 


TIN বা Tax Identification Number কী? 

যারা এখনো জানেন না TIN কী, তাদের জ্ঞাতার্থে, TIN হলো Tax Identification Number। বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরণের সরকারী সেবা, ব্যবসা, জমি-জমা ইত্যাদি নানান রকম কাজে একজন ব্যক্তি ঠিক ঠাক ট্যাক্স জমা দিচ্ছে কিনা তার প্রমাণ থাকা বাধ্যতামূলক। এই প্রমাণ দেয়ার জন্য মূলত যেকোনো ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে একটি TIN Certificate বা Tax Identification Number গ্রহণ করতে পারে এবং এই TIN ব্যবহার করে ট্যাক্স জমা দিয়ে আয়কর রিটার্ণ সার্টিফিকেট নিয়ে বিভিন্ন কাজ সমাধান করতে পারে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, একজন ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে কেবল একটি TIN নিতে পারবে। যদি সে কোনো কারণে TIN নিয়েও প্রতিবছর ট্যাক্স প্রদান না করে তাহলে সরকারি কোনো কাজ করতে গেলে তাকে জরিমানাসহ বিগত সকল ট্যাক্স পরিশোধ করে এরপর কাজটি করতে হবে। 


TIN বা Tax Identification Number কীভাবে বাতিল করা যায়? 

বাংলাদেশে প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষের TIN আছে, অথচ ট্যাক্স রিটার্ণ সার্টিফিকেট জমাকারী মানুষের সংখ্যা মাত্র ৩০ লক্ষের কিছু বেশী। এই বাকি ৫০ লক্ষ মানুষ সবাই যে ট্যাক্স ফাঁঁকি দিচ্ছেন এমন টা নয়, এখানে অনেকেই এমন আছেন যাদের বর্তমানে আর করযোগ্য আয় নেই, অথবা কোনো বিশেষ প্রয়োজনে হয়ত কেউ TIN নিয়েছিলেন যা বর্তমানে আর ব্যবহার হচ্ছেনা। এখন ২০০০ টাকা আয়কর দেয়ার নির্দেশনায় মূলত বিপদে পড়তে যাচ্ছেন এই সকল মানুষেরা যাদের হয়ত অনেকেরই  কোনো আয় নেই বললেই চলে। তাদের জন্য এই নির্দেশ অনেকটা মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতনই বলা যায়। তবে হ্যাঁ, বিশেষ কিছু শর্তে বাতিল করা সম্ভব এই TIN Certificate। যেই ৫ টি শর্তে TIN বাতিল করতে পারবেন সেগুলো হলোঃ

  1. যদি TIN হোল্ডার মৃত্যুবরণ করেন সেক্ষেত্রে তার ডেথ সার্টিফিকেট জমা দিয়ে তার ওয়ারিশগণ TIN বাতিলের আবেদন করলে তার TIN বাতিল হয়ে যাবে। 
  2. কেউ যদি বিশেষ প্রয়োজন যেমন ব্যবসা, জমি-জমা ইত্যাদি কাজের জন্য TIN নিয়ে থাকে এবং বর্তমানে কোনো করযোগ্য আয় না থাকে তাহলে তিনি পরপর ৩ বছর শূন্য রিটার্ণ জমা দিয়ে সেই সার্টিফিকেট সাবমিট করে TIN বাতিলের আবেদন করতে পারবেন।
  3.  ৬৫ বছরের উর্ধ্বের যেসকল পুরুষ বা মহিলা যাদের পূর্বে করযোগ্য আয় ছিলো কিন্তু বর্তমানে নেই, তারাও পরপর ৩ বার শূন্য রিটার্ণ জমা দিয়ে একইভাবে TIN বাতিলের আবেদন করতে পারবেন।   
  4. নন রেসিডেন্ট বা বিদেশী নাগরিক কেউ যদি সাময়িক কর দেয়ার জন্য TIN নিয়ে থাকে তাহলে তিনি চাইলে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে TIN বাতিল করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
  5. এমন কোনো ব্যক্তি যার কোনোপ্রকার করযোগ্য আয় নেই, তিনিও পরপর ৩ বার শুন্য রিটার্ণ জমা দিয়ে এরপর TIN বাতিলের আবেদন করতে পারবেন।  


তবে যদি কারো পক্ষে TIN নম্বর বহাল রাখা সম্ভব হয় তাহলে তার উচিৎ হবে TIN বাতিল অথবা বন্ধ না করা। কেননা ৬৫ বছরের উর্ধ্বে অথবা মৃত নন এমন অধিকাংশ ব্যক্তির জীবনে কোনো বা কোনো সময় পুনরায় TIN এর প্রয়োজন হতে পারে। 


Post a Comment

0 Comments