Apply for অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ইন বাংলাদেশ - মাত্র ৫ দিনে!

বর্তমান সময়ে যারা বিদেশে পড়াশোনা, চাকরি, ট্যুর, ভিসা প্রসেসিং বা স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করতে চান, তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হলো পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (Police Clearance Certificate - PCC)

বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ছাড়ার সময় অনেক ক্ষেত্রেই এই সার্টিফিকেট চাওয়া হয়। বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিট, স্টাডি পারমিট বা প্রবাসী ভিসার জন্য আবেদন করলে এই ক্লিয়ারেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।


পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কী?

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট হলো একটি সরকারি নথি যা নিশ্চিত করে যে, সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশে কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই। এটি আপনার “Character Verification” হিসেবে কাজ করে।

আগে যেভাবে থানায় গিয়ে ঘুরতে হতো, এখন সেই সময় শেষ। এখন আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন, এবং মাত্র ৫ কর্মদিবসের মধ্যে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন!


পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী

১. বৈধ পাসপোর্ট: আবেদনকারীর কমপক্ষে ৩ মাস মেয়াদ রয়েছে এমন বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।

২. ঠিকানা মিল থাকা: আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা হিসেবে পাসপোর্টে উল্লেখিত স্থায়ী বা জরুরি (Emergency) ঠিকানার যেকোনো একটি ব্যবহারযোগ্য। তবে আবেদনকারীকে অবশ্যই উক্ত ঠিকানায় বসবাস করতে হবে।

৩. ঠিকানার প্রমাণ: যদি মেশিন রিডেবল পাসপোর্টে (MRP) কোনো ঠিকানা উল্লেখ না থাকে, তাহলে ঠিকানা প্রমাণস্বরূপ জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)/জন্ম সনদ/স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্রের ফটোকপি প্রথম শ্রেণির গেজেটেড অফিসার দ্বারা সত্যায়িত করে জমা দিতে হবে।

৪. প্রবাসীদের জন্য নিয়ম: বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে, আবেদনকারীর পক্ষে প্রেরিত আবেদনের সাথে সেই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশনের মাধ্যমে সত্যায়িত পাসপোর্টের তথ্যপাতার কপি জমা দিতে হবে।

৫. অনলাইন প্রক্রিয়ায় ইস্যু: বিদেশগামী/প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক এবং বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের জন্য অনলাইনেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ইস্যু করা হয়।

৬. বাইরের দেশ থেকে ইস্যুকৃত পাসপোর্ট: যদি আবেদনকারী অন্য কোনো দেশ থেকে পাসপোর্ট ইস্যু বা রি-ইস্যু করে থাকেন, তাহলে বাংলাদেশে আসার পর সর্বশেষ Arrival সিল সম্বলিত পৃষ্ঠাটির স্ক্যান কপি আবেদন ফর্মের সাথে আপলোড করতে হবে।

৭. অথোরাইজেশন লেটার: প্রবাসী আবেদনকারী যিনি অন্য কারও মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করাতে চান, তাকে সেই ব্যক্তির নাম ও NID নম্বরসহ একটি সত্যায়িত অনুমতি পত্র (Authorization Letter) আবেদন ফর্মের সাথে যুক্ত করতে হবে। স্থানীয় আবেদনকারীর ক্ষেত্রেও যিনি সনদ সংগ্রহ করবেন, তার জন্য অনুরূপ অথোরাইজেশন লেটার থাকতে হবে।

৮. অভ্যন্তরীণ ক্লিয়ারেন্সের ক্ষেত্রে: যদি চাকরি বা অন্যান্য কাজে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে নিজ জেলা হলে জেলা ডিএসবি অফিসে অথবা মেট্রোপলিটন এলাকায় হলে সংশ্লিষ্ট সিটি এসবি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

৯. সনদ গ্রহণের সময় যা লাগবে: সনদ গ্রহণের সময় আবেদনকারীর পাসপোর্ট কপি অথবা আবেদনকৃত ফর্মের কপি সঙ্গে আনতে হবে। যদি আবেদনকারী বিদেশে থাকেন, তবে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস কর্তৃক সত্যায়িত অথবা “Justice of the Peace” কর্তৃক সত্যায়িত অথোরাইজেশন লেটার সঙ্গে আনতে হবে।


প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের তালিকা:

১. পাসপোর্টের তথ্য পাতার সত্যায়িত স্ক্যান কপি (১ম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত)
২. জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
৩. ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সনদ / নাগরিকত্ব সনদ
৪. সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের পাসপোর্ট সাইজ ছবি
৫. জন্ম সনদ
৬. ইউটিলিটি বিলের কপি (বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী)
৭. বাংলাদেশ ব্যাংক বা সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখা থেকে ১-৭৩০১-০০০১-২৬৮১ কোডে ৳৫০০/- (পাঁচশত টাকা) মূল্যমানের ট্রেজারি চালান জমা দিতে হবে। অথবা অনলাইনে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে নির্ধারিত সার্ভিস চার্জসহ ফি প্রদান করতে হবে (যদি এই অপশন প্রযোজ্য হয়)।

বিস্তারিত জানতে অথবা ধাপে ধাপে ভিডিও দেখে আবেদন করতে নিচের ভিডিওটি দেখুন।


আবেদন করার ধাপসমূহ:

ধাপ ১: ওয়েবসাইটে নিবন্ধন
প্রথমে অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। আপনি নিজে বা অন্য কারো পক্ষে আবেদন করতে চাইলে অবশ্যই নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক।
🔗 নিবন্ধনের জন্য এখানে ক্লিক করুন: https://pcc.police.gov.bd

ধাপ ২: লগইন করে আবেদন শুরু করুন
নিবন্ধনের পর লগইন করে ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করুন এবং "Apply" মেনুতে ক্লিক করে নতুন একটি আবেদন শুরু করুন।

ধাপ ৩: ব্যক্তিগত ও ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য পূরণ
প্রথম ধাপে: আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, পিতার নাম, জন্মতারিখ, পাসপোর্ট নম্বর ইত্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করুন।

দ্বিতীয় ধাপে: বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা পূরণ করুন।
🔔 মনে রাখবেন, আপনার বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট থানা বা মেট্রোপলিটন পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করবে।

ধাপ ৪: ডকুমেন্ট আপলোড

তৃতীয় ধাপে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যেমন:
  • সত্যায়িত পাসপোর্টের তথ্য পাতার স্ক্যান কপি
  • জাতীয় পরিচয়পত্র/অনুমতি পত্র (যদি প্রযোজ্য হয়)
  • ট্রেজারি চালান বা অনলাইন পেমেন্ট স্লিপ

এসব ফাইল যথাযথভাবে স্ক্যান করে আপলোড করুন।

ধাপ ৫: পূরণকৃত তথ্য যাচাই ও আবেদন সাবমিট
চতুর্থ ধাপে আপনার পূরণকৃত সকল তথ্য একসাথে প্রদর্শিত হবে।

যদি কোনো তথ্য ভুল থাকে, তাহলে পূর্ববর্তী ধাপে ফিরে গিয়ে তা সংশোধন করতে পারবেন।
একবার আবেদন সাবমিট করলে আর কোনো তথ্য পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না, তাই সাবধানে যাচাই করে সাবমিট করুন।

ধাপ ৬: ফি পরিশোধ ও পরবর্তী নির্দেশনা
সাবমিটের পর নির্ধারিত ফি (৳৫০০) ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে অথবা অনলাইনে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পরিশোধ করুন।

ফি পরিশোধের পর আপনাকে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দেওয়া হবে যেমনঃ স্ট্যাটাস ট্র্যাকিং, ভেরিফিকেশন আপডেট ইত্যাদি।


Post a Comment

0 Comments