গ্রাফিক্স ট্যাবলেট শব্দটি বাংলাদেশীদের মধ্যে বেশ নতুন একটা শব্দ সংযোজন বলা চলে। গ্রাফিক্স নিয়ে যারা কম বেশী কাজ করেন তাঁরাই মূলত এটি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু আপনি জানেন কি বর্তমানে অনলাইন বাংলাদেশের যুগে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট হতে পারে আপনার জন্য যথেষ্ট হেল্পফুল আর হ্যাণ্ডি একটি জিনিস? বিশেষ করে যারা ডিজিটাল আর্ট করেন, অনলাইনে ক্লাস নেন তাদের জন্য এটি হতে পারে একটি প্রয়োজনীয় গ্যাজেট।
গ্রাফিক্স ট্যাবলেট হলো এমন একটি ট্যাবলেট যেটার সারফেসে আপনি পেন ব্যবহার করে লিখবেন, আর সেটা প্রতিফলিত হবে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিনে। তবে সেটা অবশ্য যেমন তেমন পেন হলে চলবেনা। হতে হবে স্টাইলাস যা আপনাকে ট্যাবলেটের সাথেই প্রোভাইড করা হবে। কঠিন মনে হচ্ছে? আসলে জিনিসটি ব্যবহার করা বেশ সহজ।
কেন ব্যবহার করবেন?
গ্রাফিক্স ট্যাবলেট ব্যবহার করা বেশ সহজ। কাগজে কলম দিয়ে আঁকা বা লেখার মত করে আপনি ডিজিটাল কাজ করতে পারবেন এটি দিয়ে। মাউস দিয়ে কিছু আঁকাতে যে কষ্ট হয়, তার চেয়ে ট্যাবলেটে ভালো এ্যাকুরেসি পাওয়া যায় আর এটি বেশ ফ্লেক্সিবল বলা যায়। যারা ফিল্যান্সিং করে বা করতে চায় তারা গ্রাফিক্স ট্যাবলেট ব্যবহার করে বিভিন্ন রকম ক্রিয়েটিভ কাজ করতে পারে। অনলাইন পাঠদানের ক্ষেত্রে স্ক্রিনে ক্লাসরুমের বোর্ডের মত লিখে লিখে পাঠদান করার ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স ট্যাবলেটের জুড়ি নেই।
ওপরের ছবিতে আপনারা যেটা দেখছেন সেটিই হলো একটা মিনিমাল ডিজাইনের গ্র্যাফিক্স ট্যাবলেট। আপনি বাংলাদেশে নানান ব্র্যান্ড, সাইজ এবং সে অনুযায়ী বিভিন্ন দামে এটি কিনতে পারবেন। ট্যাবলেটের সাথে আপনাকে কানেক্টর দিয়ে দেয়া হবে। কানেক্টর ক্যাবল দিয়ে পিসি বা মোবাইলে কানেক্ট করে স্টাইলাস পেন দিয়ে করতে পারবেন যা ইচ্ছা তাই। স্টাইলাস পেনগুলো কম্পিউটারের মাউসের মতই কাজ করে থাকে এবং স্টাইলাসে মুভ করার পর সেটাকে মাউসের মত ব্যবহার করে আপনি পিসির স্ক্রীনে লেখা লেখি বা আঁকাআঁকি করতে পারবেন। অনেক দুঃসাধ্য কাজ যা মাউস দিয়ে করা কঠিন, এই স্টাইলাস দিয়ে তা করা অনেক বেশী সহজ। কেনার পর পিসিতে ব্যবহার করার জন্য আপনাকে ট্যাবলেট কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে মডেল নাম্বার অনুযায়ী একটি ড্রাইভার এ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে হবে। এ্যাপ ইন্সটল করার পর এই ড্রাইভার এ্যাপ দিয়েই আপনি ট্যাবলেটের বিভিন্ন সেটিংস পরিবর্তন করে ব্যবহার করতে পারবেন নিজের সুবিধামত।
কোথায় পাবেন এটি? কেমন দাম পড়বে?
প্রতিটা পণ্যের মত ট্যাবলেটের মধ্যেও রয়েছে প্রকারভেদ। ব্র্যান্ড, ডাইমেনশন, সাইজ ইত্যাদির ভিত্তিতে দামের মধ্যে রয়েছে বেশ পার্থক্য। ভালো ব্র্যান্ডের মধ্যে আপনি Wacom, Huion, Xp-Pen এই ব্র্যান্ডগুলো চয়েজে রাখতে পারেন। এগুলো সবই চায়না থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। তাই অনেক দোকানে বা অনলাইন শপে আপনাকে প্রি-অর্ডার করতে হতে পারে। প্রি অর্ডারে সাধারণত দাম একটু কম হয়, সরাসরি কিনতে চাইলে কিছুটা বেশী দামেই নিতে হয়।
এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার হলো ট্যাবলেট কেনার জন্য ভালো ঠিকানা। মাল্টিমিডিয়া কিংডম-সহ আরও অনেক দোকান থেকেই আপনি যাচাই বাছাই করে ট্যাবলেট কিনতে পারবেন। এছাড়াও স্টার টেক, রায়ানস কম্পিউটারস থেকেও পেয়ে যাবেন এই ট্যাবলেটগুলো। ট্যাবলেট গুলোর নূন্যতম দাম পড়তে পারে ৪,০০০ টাকা। ৪,০০০ থেকে শুরু করে আপনি দাম যত বাড়াতে পারবেন তত দামের মধ্যেই কিনতে পারবেন। তবে মোটামুটি ভালো সাইজ আর ব্র্যান্ড নিতে চাইলে আপনি তা ৮,০০০ থেকে ১৫,০০০ হাজার টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
কেনার সময় কি কি বিষয় মাথায় রাখতে হবে?
১। রেজুলেশন- যত ভালো হবে, কাজ তত নিঁখুত হবে।
২। প্রেশার সেনসিটিভিটি- যত ভালো হবে, কাজ তত সহজে করা সম্ভব হবে।
৩। ট্র্যাকিং স্পিড- যত ভালো হবে, তত দ্রুত কাজ করা যাবে।
৪। ট্যাবলেটের ফিজিক্যাল সাইজ- ট্যাবলেটের এরিয়া যত বড় হবে, কাজ করতে সুবিধা হবে।
৫। কানেক্ট করার জন্য কেমন টাইপ USB ব্যবহার করা হচ্ছে।
৬। অপারেটিং সিস্টেম এবং সফটওয়্যার কম্প্যাটিবল কিনা।
৭। মান অনুযায়ী দাম।
জেনে রাখুন ড্রয়িং ট্যাবলেট সম্পর্কে
আরেক ধরনের ট্যাবলেট আপনি অনলাইনে চেক করলে দেখতে পারবেন যেটাতে সরাসরি স্ক্রিনের ওপরেই আঁকানো যায়। এগুলোকে বলা হয় ড্রয়িং ট্যাবলেট। ড্রয়িং ট্যাবলেটগুলোর দাম বেশ অনেক বেশী। এই ট্যাবলেটগুলো ৬০ বা ৭০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪ বা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। কখনো কখনো আরও বেশী।
3 Comments
It was really helpful
ReplyDeleteThank you.
DeleteInformative.
ReplyDelete