ইদানীং Whatsapp এবং Facebook Messenger এবং Group গুলো বেস কিছু লিংক-এর ছড়াছড়ি। যেখানে বিভিন্ন আকর্ষনীয় উপহার/ অফারের কথা বল থাকে। চলুন সেরকম কিছু লিংক কিজে জানা যাক।
এরকম একটি লিংক-এ ঢুকে যেটা পেলামঃ
১/ ওই লিংক এ ঢুকলে কুইজ দিবে কিছু।
২/ কুইজগুলো সহজ তাই সবাই পারবে।
৪/ কুইজ শেষে একটা স্পিন-এ অংশগ্রহণ করতে বলবে।
৫/ স্পিন ঘুরালে বলবে একটা আইফোন জিতেছেন।
৬/ আইফোনটি নিতে হলে লিংক শেয়ার করতে বলবে।
৮/ আইফোন নেওয়ার জন্য আরেকটা পেজে পাঠিয়ে বলবে ডলার জিতেছেন।
৯/ এবার বলবে পারসোনাল ইনফরমেশন দিতে এবং কিভাবে ডেলিভারি নিবেন সেটা জিজ্ঞেস করবে।
১০ / এর মাঝে ওরা কিছু পপ-আপ রিকোয়েস্ট পাঠাবে। এই রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করলে যেটা হবেঃ
i) ঐ পপ-আপ উইন্ডতে ক্লিক করলে, আপনি ফোন ব্যবহারকারী হলে কয়েকটা নম্বরে আপনার নম্বর থেকে মেসেজ যেতে পারে।
ii) পিসি ব্যবহারকারী হলে আপনার ব্রাউজারে এক্সটেনশন এড করতে বলতে পারে। অনেকেই না বুঝে Add এ ক্লিক করে বসে থাকবে।
এটা গেল কি হতে পারে। এবার ফলাফল বলিঃ
১/ আপনার পাসোনাল ইনফরমশন দিলে তাদের কাছে ডেটা চলে যাবে।
২/ আপনার ফোন নম্বর থেকে মেসেজ গেলে তাদের কাছে আপনার ফোন নম্বরটিও চলে যাবে।
৩/ ব্রাউজারে এক্সটেনশন ইন্সটল করলে এডওয়্যার Addons/extension ইন্সটল হয়ে যাবে যেটা আপনার ব্রাউজারে কুকিজ/ ক্যাশ নিয়ে নিতে পারে।
এর ফলে যা হবেঃ
১/ আপনার নম্বর ব্যবহার করে এডভার্টাইজিং মেসেজ আসতে পারে।
২/ আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে ফেক ব্যবহারকারী হয়ে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় বিভিন্ন ধরনের এক্টিভিটি করতে পারে।
৩/ এডওয়্যার আপানর ব্রাউজিং এর সময় ইন্টারাপ করতে পারে। কুকিজ/ক্যাশ বিশ্লেষণ করে আপনার ব্যবহৃত গুরুপূর্ণ তথ্য যেমন একাউন্টের এক্সেস/পাসওয়ার্ড পেয়ে যেতে পারে।
এখন প্রশ্ন হল এই লিংক-এ যদি একজন মানুষ ভুলক্রমে ক্লিক করে ঢুকে পড়ে তাহলে কোনো সমস্যা হবে কিনা?
উত্তরঃ না। কোন ওয়েব লিংক-এ শুধু মাত্র ঢুকে পড়লেই সমস্যা হবেনা। যদি না তিনি "Cache and cookies" এর access দেন, personal information দেন, pop up window তে ক্লিক করে কোন permission allow করেন।
কিভাবে এই বিষয়ে সচেতন হতে পারি?
১/ কোন লিংক-এ ঢুকার আগে লিংকটা দেখে নেওয়া। আদৌ সেই লিংক সাধারণ লিংকগুলোর মত দেখতে কিনা।
২/ লিংকটি যে বিষয়বস্তু চিত্রিত করছে, আদৌ সেই বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত কিনা।
৩/ কোন নামি দামি কোম্পানি-এর নামে কোন অফার লিংক হলে, খোঁজ খবর করে নেওয়া আদৌ তারা এরকম কোনো অফার দিচ্ছে কিনা।
৪/ যদি সম্ভব হয় তবে গুগলে ওই ওয়েবসাইট সম্পর্কে কোন তথ্য আছে কিনা দেখে নেওয়া।
৫/ যদি ভুল ক্রমে ঢুকে পড়েন পেনিক না হয়ে লিংক এর window-টি বন্ধ করে দেওয়া।
৬/ কোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করলে কিছুর পারমিশন চাইলে বা ইন্সটল করতে বললে না করা। এতে যদি ওই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে নাও দেয় তবেও পারমিশন না দেওয়া।
৭/ cookies permission এর ক্ষেত্রে দেখে নেওয়া যে এটা পরিচিত কোনো ওয়েবসাইট কিনা।
৮/ ভুলেও কোথাও বিকশ/নগদ/রকেট/ব্যাংক একাউন্ট/ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের নম্বর শেয়ার না করা।
যদি ভুল ক্রমে তথ্য দিয়ে ফেলেন কিংবা এক্সটেনশন এড করে ফেলেন অখন কি করবেনঃ
১/ ব্যক্তিগত তথ্য একবার দিয়ে ফেললে সেক্ষেত্রে সেই তথ্য আর তো ফিরিয়ে আনা যাবেনা। তাই যা গেছে তাই গেছে মনে করে পরবর্তীতে আর তথ্য শেয়ার না করা।
২/ এন্ড্রোয়েড ফোন হলে ব্রাউজারের ক্যাশ/ডেটা ক্লিন করে দিন্।
৩/ ঊইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের কম্পিটার হলে যদি ভুলক্রমে এক্সটেনশন সেটআপ দিয়ে ফেলেন এবং প্রবর্তীতে সেটা রিমুভ করতে ব্যর্থ হলে দক্ষ কারও সহযোগিতা নিন। (এক্ষেত্রে অনেক সময় উইন্ডোজ নতুন করে দেওয়া লাগে।)
৪/ লিন্যাক্স অপারেটিং সিস্টেম -এর কম্পিউটার হলে শুধু ব্রাউজারের কুকিজ/ক্যশ মুছে ফেলা এবং এক্সটেনশন্টি রিমুভ করে দিলেই কাজ হবে।
৫/ আপনি যদি মনে করেন আপনার গুরুত্বপূর্ন কোন তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে, আর সেটা যদি হয় পাসওয়ার্ড তবে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে নিন।
৬/ আপনি যদি মনে করেন আপনার গুরুত্বপূর্ন কোন তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে, আর সেটা যদি হয় এমন কোন তথ্য যার মাধ্যমে ভার্চুয়াল ক্রাইম করা সম্ভব, তবে দ্রুত নিকটস্থ থানায় বিস্তারিত সহ একটি সাধারণ ডায়রি করে নিন।
"নিজে সচেতন থাকুন, কাছের মানুষদের সচেতন রাখুন। যাকে শত্রু মনে করেন তাকে সচেতন হতে সহযোগিতা করুন। হয়ত এতে সে আপনাকে বন্ধু ভাবতে শুরু করবে।"
©মোঃ সোহানুর রহমান সাকিব।
0 Comments